চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। চীনে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে এই ভাইরাস। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৬ জনে। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি নাগরিক। এমন পরিস্থিতে সেখানে অবস্থান করা বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে উদগ্রিব।
তবে দেশের কথা ভেবে আপাতত দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চীনের ইয়াননান প্রদেশের কুনমিং সিটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বর্ণ সিদ্দিকী। এক ভিডিও বার্তায় সেখানকার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, এই মুর্হূতে দেশের স্বার্থে আমি আমার মাতৃভূমিতে যাবো না। চীনে আমরা শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও হাজার হাজার বাংলাদেশি আছেন। আমরা জানি না এই রোগটা কার কাছে চলে এসেছে। এই রোগটার একটা অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এটি শরীরে আসার পর থেকে ১৪ দিন অবস্থান করবে এবং কোনো লক্ষণও প্রকাশ করবে না। এখন আমরা যারা এখানে আছি তারা যদি দেশে ফিরে যাই তাহলে নিজের অজান্তেই কারো না কারো সাথে এই ভাইরাস দেশে চলে যেতে পারে। তাই দেশের সার্থে এখন চীনে থাকাই ভালো।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বর্ণ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি এই মুর্হূতে বাংলাদেশে যেতে চাই না। সেখানে গিয়ে আমার যদি খারাপ অবস্থা হয়, তবে তো আমার পরিবারের মধ্যেও এসব ছড়াবে। এটা ভাইরাস জনিত রোগ। কারো সাথে থাকলেই এই রোগের বিস্তার ঘটবে। আমার বাবা-মা যতই বলুক। আমি সেখানে যাবো না।’
ভিডিওতে চীনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে গোটা চীনেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তেমন খবর আসছে না। আমি আমার চাইনিজ বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি যা বহির্বিশ্বের গণমাধ্যমে তেমন খবর প্রকাশ পাচ্ছে না। চীন সরকার চাচ্ছে না যে এই ভাইরাসটার কারণে অন্যরা উদগ্রিব হোক।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে এই ভাইরাসের প্রভাব চীনের অর্থনীতিতেও পড়েছে। আমি ইতিমধ্যে অনেকগুলো বাজার ঘুরেছি, আগে এসব বাজারে শাক-সবজির কোন ঘাটতি না থাকলেও এখন কোনো কাঁচা তরকারি পাওয়া যাচ্ছে না। যা পেয়েছি তা শুষ্ক খাবার।
এদিকে চীনের উহান শহরে প্রায় তিনশ’রও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। এরা সবাই উহান শহরে নিজেদের কক্ষে প্রায় বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তবে উহান শহরে থাকা বিদেশি নাগরিকদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ছাড়বে না চীন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে চীনের উহান নগরী থেকে ছড়ানো করোনা ভাইরাসের বিস্তারে প্রাণে বাঁচতে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান তাদের আরও ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরে বেইজিংয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।