কুলাউড়ায় হতদরিদ্রদের বিভিন্ন ভাতা বিতরণে অনিয়ম

912

জাফর আহমদ, কুলাউড়া প্রতিনিধি:: কুলাউড়া উপজেলার ১২ নং পৃথিমপাশা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০ অক্টোবর এমনি এক অভিযোগ কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন । লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সরকারের হতদরিদ্রদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রির তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । ১২১ টি কার্ডের মধ্যে অর্ধেক মেম্বারের আত্মীয় স্বজনকে ও বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীদের অন্তর্ভুক্তি করে তৈরী করেছেন।

একই পরিবারের স্বামী স্ত্রীকে অন্তর্ভুক্তি করা, যারা বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা পাচ্ছে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করায় উক্ত ওয়ার্ডে অনেক ভিক্ষুক ও গরীব মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়াও নানা অনিয়ম করে ওয়ার্ডের ১২১ জনের তালিকা জমা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ‘মনিটরিং’ কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে।

এদিকে সরজমিনে ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১২ নং পৃথীমপাশা ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা প্রধানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান সহ একাদিক মেম্বারদের বিরুদ্ধে, তারা তাদের আত্মীয় স্বজন ও দলীয় লোকদেরকেই ভাতার কার্ড দিয়েছে বলে এলাকাবাসী আমাদের জানান । ওই ইউনিয়নের মুহিব আহমদ বলেন, আমরা গরিব মানুষ ‘দিন এনে দিন খাই’ কিন্তু আমাদেরকে কোনু ভাতা দেওয়া হয় নাই, চেয়ারম্যানে ও মেম্বরা তাদের পরিচিত মানুষকেই দেয় । রাঙ্গি এলাকার আম্ভিয়া খাতুন নামে এক বৃদ্ধা মহিলার সাথে কথা হয়, তিনিও একই কথা বলেন ‘ঐ সব ভাতা আমাদের জন্য না , দলীয় মানুষ হলেই মিলবে বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড । নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক অনেক ওয়ার্ডের হতদরিদ্রদরা একই ধরনের অভিযোগ করেন । বেশির ভাগ ভক্তভুগিরা চেয়ারম্যান মেম্বারদের ও আওয়ামীলীগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের ভঁয়ে এই সব বিষয়ে কথা বলতে অনিচ্ছুখ ।

সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় কুলাউড়ার ১২নং পৃথিমপাশা ইউনিয়নে হতদরিদ্র, অসচ্ছল পরিবারের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে প্রতি ইউনিয়নে হতদারিদ্রের ও দুঃস্থতার মাত্রা বিবেচনায় উপকারভোগি পরিবারের মাঝে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা প্রনয়নের দায়িত্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন সরকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটির । কিন্তু মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকৃতপক্ষে তালিকা প্রনয়ণ করেছেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বাররা এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও যোবলীগের নেতৃত্বে। এতে শুধু দুঃস্থতা বিবেচনা না করে দলীয় বিবেচনায় তালিকা করে পরিষদের ৯টি ওয়ার্ডে অনেক সচ্ছল,বিত্তবান পরিবারের ব্যাক্তিরা তালিকাভূক্ত হয়েছেন এবং তারা এই সুবিধা আওতায় দীর্ঘদিন থেকে । এর ফলে রাজনীতির সাথে জড়িত নয় এমন বহু দুঃস্থ পরিবার ১০ টাকা কেজি দরে চাল কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । এতে চেয়ারম্যান আলী বাকর খান হাসনাইন ও পরিষদের সদস্যগণদের অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে মুখ খুলতে ও এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায় ।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে জান ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts